চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: >>> চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসে কথিত পরিচ্ছন্ন কর্মীর বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর নির্বাচন অফিসে আস্থা না থাকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে লিখিতভাবে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ করেছেন এক ভুক্তভোগী। ঘুষ বাণিজ্যের সাথে জড়িত কথিত নিয়োগপ্রাপ্ত আউটসোর্সিং পরিচ্ছন্ন কর্মী মোঃ রকি’র বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের বাজিতপুর এনায়েত বিশ্বাসপাড়ার মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে আবু সায়েম। শুধু আবু সায়েম নয়, নির্বাচন অফিসে সেবা নিতে এসে অনেকে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন বলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
উপজেলা প্রশাসন বলছেন, প্রতিটা নাগরিককে সঠিক ও হয়রানীমুক্ত সেবা প্রদানে নিরাসলভাবে কাজ করা হচ্ছে এবং অনিয়ম, দূর্ণীতি আর ঘুষ বাণিজ্য মুক্ত করতে সব ধরনের আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বলছেন আমার দপ্তরে আমি-ই প্রধান, ইউএনও আমার দপ্তরের প্রধান না!
জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন ছাড়াই উপজেলা নির্বাচন অফিসার ব্যক্তিগতভাবে মোঃ রকি কে পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ৬ মাস আগে। কিন্তু একজন পরিচ্ছন্ন কর্মী হয়েও মোঃ রকি নির্বাচন অফিসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেন। এছাড়া তাঁর পরিধানের পোষাক সমূহ দেখে মনে হয় তিনি একজন উচ্চ পদের কর্মকর্তা ও অফিসে যাতায়াতে ব্যবহার করেন মটরসাইকেল।
ভুক্তভোগী আবু সায়েম জানান, গত ২০ নভেম্বর আমি নতুন ভোটার হওয়ার জন্য অনলাইন আবেদনসহ সমস্ত কাগজপত্র উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দিয়েছি। কিন্তু তাৎক্ষনিক ভোটার হওয়ার জন্য ছবি তুলতে চাইলে নির্বাচন অফিসের মোঃ রকি আমাকে ১ হাজার ৫’শ টাকা ঘুষ দাবি করেন। আর টাকা পেলে তিনি তাৎক্ষনিক ছবি তোলার ব্যবস্থা করে দিবেন। যদি ঘুষের ১ হাজার ৫’শ টাকা না দেয়া হয়, তাহলে আমাকে আগামী বছরের ফেব্রæয়ারি মাসে যোগাযোগ করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বিনোদপুর ইউনিয়নের কালিগঞ্জ এলাকার মোঃ নয়ন আলী রাজিব নামে একজন আমার সামনে তাঁর নাম সংশোধনের জন্য অফিসে আসলে তাঁর কাছ এক প্যাকেট ব্যানসন সিগারেট গ্রহণ করে এই মোঃ রকি। রকি’র ঘুষ বাণিজ্যের বিষয়টি উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে জানালে তিনি আমাকে একটা সাদা কাগজ ধরিয়ে দিয়ে আবেদন করতে বলেন। কিন্তু আমি নির্বাচন অফিসারের প্রতি আস্থা না পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অভিযোগ দিলে তিনি তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে আমাকে নতুন ভোটার হতে সার্বিক সহযোগিতা করেন। সেই ইউএনও স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা মোঃ তাসিনুর রহমান বলেন, মোঃ রকি কে আমি ব্যক্তিগত ভাবে আউটসোর্সিং পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি। তাঁর কাজ অফিসের পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা।
তিনি আরো বলেন, একজন আমাকে মৌখিকভাবে অভিযোগ করলে আমি তাঁকে লিখিত অভিযোগ করতে বলি। কিন্তু তিনি আমার দপ্তরের অভিযোগ আমাকে না দিলে, আমি এটা গ্রহণ করবো না। আমাকে আমার দপ্তরের অভিযোগ না দিয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অভিযোগ দিয়েছেন। আমার দপ্তরে আমি প্রধান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমার দপ্তরের প্রধান নয়। আমার দপ্তরের অভিযোগ আমাকে দিতে হবে এবং ইউএনও কে অনুলিপি দিবে এটাই হচ্ছে নিয়ম।
এদিকে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুল হায়াত জানান, নির্বাচন অফিসের রকি’র বিরুদ্ধে আবু সায়েম নামে একজন আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করলে আমি তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহন করি। রকি কে আমার অফিসে ডেকে ভুক্তভোগীর কাছে ভুল স্বীকার ও ক্ষমা চাইতে বলি এবং নির্বাচন অফিসারকে তাৎক্ষনিক অভিযোগকারীর কাজ করে দিতে বলি। এছাড়া নির্বাচন অফিসারকে সতর্ক বার্তা দেয়া হয়।
তিনি আরো জানান, শুধু নির্বাচন অফিস নয়, উপজেলার যে সব অফিসে এই ধরনের অনিয়ম পাওয়া যাবে আমি তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমি উপজেলাকে অনিয়ম, দূর্ণীতি আর ঘুষ বাণিজ্য মুক্ত করতে সব ধরনের আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ হবো।
Leave a Reply